chhotoder chhora লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
chhotoder chhora লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

৪ ফেব, ২০১৬

ছিটে-ফোঁটা

 
উঠোন-কোণে কড়াই ছিল,
পায়েস ছিল তাতে,
তাই নিয়ে কাক লড়াই করে কুঁকড়ো বুড়োর সাথে।
যুদ্ধ জিতে বড়াই ভারি,
তখন দেখে চেয়ে--
কখন এসে চড়াই পাখি,
পায়েস গেছে খেয়ে।।
 
--সুকুমার রায়--

৩ ফেব, ২০১৬

টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌

 
টিক্‌-টিক্‌ চলে ঘড়ি টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌
একটা ইঁদুর এল সে সময়ে ঠিক!
 
ঘড়ি দেখে এক লাফে তাহাতে চড়িল,
টং করে অমনি ঘড়ি বাজিয়া উঠিল।
 
অমনি ইঁদুর ভায়া লেজ গুটাইয়া,
ঘড়ির উপর থেকে পড়ে লাফাইয়া!
 
ছুটিয়া পলায়ে গেল, আর না আসিল,
টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌ ঘড়ি চলিতে লাগিল।
 
--সুকুমার রায়--

২ ফেব, ২০১৬

হাসিখুশি থেকে .... (৩)

- কাকাতুয়ার মাথায় ঝুঁটি 
- খ্যাঁকশিয়ালি পালায় ছুটি 
- গরু বাছুর দাড়িয়ে আছে 
- ঘুঘুপাখি ডাকছে গাছে 
- ঙ নৌকা মাঝি ব্যাঙ 
- চিতা বাঘের সরু ঠ্যাং 
- ছাগলছানা লাফিয়ে চলে 
- জাহাজ ভাসে সাগর জলে 

- ঝাড়ু  হাতে এল  কানাই 
- ঞ চড়ে নাচছে দুভাই  
- টিয়া পাখির ঠোঁটটি লাল 
- ঠাকুরদাদার শুকনো গাল 
- ডুলি কাঁধে বেহারা যায় 
- ঢুলিভায়া ঢোলক বাজায়
- [মূর্ধন্য]ণ নাকের 'পরে 
- তিমি আপন শিকার ধরে 
- থালা ভরা আছে মিঠাই 
- দোয়াত আছে কালি নাই 
- ধোপা কেমন কাপড় কাচে 
- নাপিতভায়া দাড়ি চাঁচে 
- পাখির বাসা হাওয়ায় নড়ে 
- ফোয়ারা হতে জল পড়ে 
- বুলবুলিটির মুখটি কালো 
- ভালুক জানে বাসতে ভালো 
- ময়ূর নাচে পেখম ধরে 
-  যাতা ঘোরে হাতের জোরে
- রাজহাঁসটির  গলা সরু 
- লাঠির চোটে পালায় গরু 
- বাঘের যত সাহস চোখে 
- শকুন কাঁদে গরুর শোকে 
- ষাঁড় ছুটেছে পুকুরপাড়ে 
- সিংহ রাগে কেশর নাড়ে 
- হাসি মুখটি দেখতে বেশ 
- ড়-এর দফা হলো শেষ 
ঢ়-এর মাথা কামড়ে খায়
- [খণ্ড-ত]ৎ ঐ পুষির গায়
- য় ছিল তাই  গেল বেঁচে 

- [অনুস্বার] ং-টি হারিয়ে গেছে 
- [বিসর্গ] ঃ-এর ভুঁড় পেট 

- [চন্দ্রবিন্দু] ঁ-র মাথা হেঁট 



--যোগীন্দ্রনাথ সরকার --


মামার বাড়ি

 
মামাদের দরজায় 
বাঘা থাকে এক;
তেড়ে  নাহি আসে , নাহি 
করে ভেক ভেক। 
 
 
মামাদের পুকুরেতে 
আছে বড় রুই;
পশু আর মাছে মিলে 
একে একে দুই। 
 
মামাদের বাগানেতে 
চরিছে হরিণ ;
দুই পশু এক মাছ-
দুয়ে একে তিন। 

মামাদের রাঙা গরু 
কিবা রূপ তার;
তিন পশু এক মাছ 
তিনে একে চার। 
 
মামাদের  বানরের 
কি মজার নাচ;
চার পশু এক মাছ 
চারে একে পাঁচ। 
 
মামাদের সাদা ভেড়া 
উঠানেতে রয়;
পাঁচ পশু এক মাছ 
পাঁচে একে ছয়। 
 

মামাদের খরগোশ 
চাটে  এসে হাত;
ছয় পশু এক মাছ 
ছয় একে সাত। 
 
মামাদের পোষা মেনি 
যেন বড়লাট;
সাত পশু এক মাছ 
সাতে একে আট। 


মামাদের রাজহাঁস 
পুকুরেতে রয়;
পশু, পাখি, মাছে মিলে 
আটে একে নয়। 
 
মামাদের চাকরের 
হয়েছে বয়স;
সবে তারে ভালবাসে 
নয়ে  একে দশ। 

--যোগীন্দ্রনাথ সরকার --

১ ফেব, ২০১৬

দশটি ছেলে

হারাধনের দশটি ছেলে 
ঘোরে পাড়াময় ,
একটি কোথা হারিয়ে গেল 
রইল  বাকি নয়। 

হারাধনের নয়টি ছেলে 
কাটতে গেল কাঠ,
একটি কেটে দুখান হল 
রইল  বাকি আট। 

হারাধনের আটটি ছেলে 
বসল খেতে ভাত ,
একটির পেট ফেটে গেল 
রইল বাকি সাত। 

হারাধনের সাতটি ছেলে 
গেল জলাশয় ,
একটি সেথা ডুবে ম'ল 
রইল বাকি ছয়। 

হারাধনের ছয়টি ছেলে
চড়তে গেল গাছ ,
একটি ম'ল পিছলে পড়ে 
রইল বাকি পাঁচ। 

হারাধনের পাঁচটি ছেলে 
গেল বনের ধার,
একটি গেল বাঘের পেটে 
রইল বাকি চার। 

হারাধনের চারটি ছেলে 
নাচে ধিন ধিন,
একটি ম'ল আছাড়  খেয়ে 
রইল  বাকি তিন। 

হারাধনের তিনটি ছেলে 
ধরতে গেল রুই,
একটি খেল বোয়াল মাছে 
রইল বাকি দুই। 

হারাধনের দুইটি ছেলে 
মারতে গেল ভেক ,
একটি ম'ল সাপের বিষে 
রইল বাকি এক। 

হারাধনের একটি ছেলে 
কাঁদে ভেউ ভেউ ,
মনের দুঃখে বনে গেল 
রইল না আর কেউ। 

--যোগীন্দ্রনাথ সরকার --

হাসি-খুশি থেকে .... (2)

 
কাক ডাকে কা কা,
আগে অ, পরে আ। 


খোকা হাসে হি হি,
[হ্রস্ব] ই , [দীর্ঘ] ঈ। 
 

ঘুঘু করে ঘু ঘু ,
[হ্রস্ব] উ  , [দীর্ঘ] ঊ। 
 

রুই কাতলা  জোড়া কৈ,
ঋ ঌ এ ঐ। 
 

ভুলো ডাকে ভৌ  ভৌ,
বাকি শুধু  ও ঔ। 


-- যোগীন্দ্রনাথ সরকার --

হাসিখুশি থেকে ....

- অজগর আসছে তেড়ে 
- আমটি আমি খাব পেড়ে 
-  ইঁদুরছানা ভয়ে মরে 
 - ঈগল পাখি পাছে ধরে 
- উট চলেছে মুখটি তুলে 
- [দীর্ঘ ] ঊ -টি আছে ঝুলে 
- ঋষি মশাই বসেন পূজায় 
- ঌ -কার যেন ডিগবাজি খায় 
- এক্কা গাড়ি খুব ছুটেছে
- ঐ দেখ ভাই চাঁদ উঠেছে 
- ওল খেয়ো না ধরবে গলা 
- ঔষধ খেতে মিছে বলা 

--যোগীন্দ্রনাথ সরকার --


যদি এমন হতো !

বাঘের মুখে ঝুলত যদি রামছাগলের দাড়ি,
শুয়োর যদি পাখির মত , উড়ত ডানা নাড়ি ,
গাছের ডালে বসে বাঁদর, গোঁফে দিত চারা,
হুতুম প্যাঁচা আসত ছুটে বাগিয়ে বিষম দাঁড়া,
উত্সাহেতে ধোপার গাধা গাইত যদি গান,
দেখে শুনে চমকে তবে উঠত না কার প্রাণ।


মোরগ ও মুরগি

 
 
মোরগ মোরগ মোরগ-টি
মাথার পরে লাল ঝুঁটি,
উচ্চে তুলে পুচ্ছ তার
করছে দেখো কি চিৎকার!
বাচ্চা নিয়ে মুরগি-টি
ওই যে কণা খায় খুঁটি,
হেথায় হোথায় ডিম পাড়ে
কোঁকর কোঁকর ডাক ছাড়ে।। 

তাঁতীর বাড়ি

 
 
তাঁতীর বাড়ি ব্যাঙ-এর বাসা
কোলা ব্যাঙ-এর ছা,
খায় দায় গান গায়
তাই রে নাই রে না।।

হাট্টিমাটিমটিম

 
হাট্টিমা টিম টিম
তারা মাঠে পাড়ে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমা টিম টিম।।

কাক

 
কুচকুচে কালো রঙ
কর্কশ ডাক,
সারাদিন দুষ্টুমি
দজ্জাল কাক।
পেটুকের শিরোমণি
দিনভর চুরি,
উঁকিঝুঁকি ঘরে-ঘরে
শুধু ঘোরাঘুরি।
খাবার দেখলে পরে
মিটিমিটি চায়,
ফাঁক পেলে ঠোঁটে নিয়ে
তখুনি পালায়।।

 

টিয়া

 
 
টিয়ারাণী টিয়ারাণী
গায়ে সবুজ শাড়িখানি,
রঙ মেখেছে রাঙ্গা ঠোঁটে
দেখো কেমন বাহার ফোটে।
বসে আছে বিয়ের কনে
সেজেগুজে আপন মনে।
টিয়া কথা কইতে পারে,
শিখিয়ে দিলে বুলি তারে।

কাকাতুয়া

 
 
ঠিক যেন রামদিন
দারোয়ান হাঁকে রে!
কৌন হ্যায় কৌন হ্যায়
কোন পাখি ডাকে রে?
পাখিদের দারোয়ান
কাকাতুয়া নাম তার,
দেখো চেয়ে পরিপাটি
পোশাকের কি বাহার! 

নোটন নোটন পায়রাগুলি

 
নোটন নোটন পায়রাগুলি ঝোঁটন বেঁধেছে

ওপারেতে ছেলেমেয়ে নাইতে নেমেছে।
দুই পারে দুই রুই কাতলা ভেসে উঠেছে,
কে দেখেছে? কে দেখেছে? দাদা দেখেছে।
দাদার হাতে কলম ছিল ছুঁড়ে মেরেছে
উঃ দাদা! বড্ড লেগেছে।।            

প্যাঁচা আর প্যাঁচানি

 

প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি,
খাসা তোর চ্যাঁচানি!
শুনে শুনে আনমন
নাচে মোর প্রাণমন!
মাজা গলা চাঁচা সুর
আহ্লাদে ভরপুর!
গলা-চেরা ধমকে
গাছপালা চমকে,
সুরে সুরে কত প্যাঁচ
গিটকিরি ক্যাঁচ্‌ ক্যাঁচ্‌!
যত ভয় যত দুখ
দুরু দুরু ধুক্‌ ধুক্‌,
তোর গানে পেঁচি রে
সব ভুলে গেছি রে-
চাঁদ মুখে মিঠে গান
শুনে ঝরে দু'নয়ান।।
 
--সুকুমার রায়--

৩০ জানু, ২০১৬

খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারুও, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল 'হাঁসজারু' কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে "বাহবা কি ফূর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।" 
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা-
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লঙ্কা?
ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে; ধড়ে মুড়ো সন্ধি!
জিরাফের সাধ নাই মাঠে-ঘাটে ঘুরিতে,
ফড়িং-এর ঢং ধরি সেও চায় উড়িতে।
গরু বলে, "আমারেও ধরিল কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে?"
'হাতিমির দশা দেখ- তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে, "এই বেলা জঙ্গলে চল ভাই।"
সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট-
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট। 

২৯ জানু, ২০১৬

বাবুরাম সাপুড়ে

                                          


বাবুরাম সাপুড়ে
কোথা যাস বাপুরে?
আয় বাবা দেখে যা,
দুটো সাপ রেখে যা!
যে সাপের চোখ নেই,
শিং নেই নখ নেই,
ছোটে না কি হাঁটে না,
কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
মারে নাকো ঢুঁসঢাঁস,
নেই কোনো উৎপাত,
খায় শুধু দুধভাত,
সেই সাপ জ্যান্ত
গোটা দুই আন তো,
তেড়ে মেড়ে ডাণ্ডা
করে দিই ঠাণ্ডা।।
 
 --সুকুমার রায়--