২১ মে, ২০১৬

সহজ পাঠ থেকে...

 
 
সেদিন ভোরে দেখি উঠে
বৃষ্টি বাদল গেছে ছুটে,
রোদ উঠেছে ঝিলমিলিয়ে
বাঁশের ডালে ডালে।
ছুটির দিনে কেমন সুরে
পুজোর সানাই বাজায় দূরে,
তিনটে শালিখ ঝগড়া করে
রান্নাঘরের চালে।
শীতের বেলায় দুই পহরে
দূরে কাদের ছাদের প'রে
ছোট্ট মেয়ে রোদ্‌দুরে দেয়
বেগ্‌নি রঙের শাড়ি।
চেয়ে চেয়ে চুপ করে রই--
তেপান্তরের পার বুঝি ওই,
মনে ভাবি ওইখানেতেই
আছে রাজার বাড়ি।
থাকত যদি মেঘে -ওড়া
পক্ষীরাজের বাচ্ছা ঘোড়া
তক্ষনি যে যেতেম তারে
লাগাম দিয়ে ক'ষে;
যেতে যেতে নদীর তীরে
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমিরে
পথ শুধিয়ে নিতেম আমি
গাছের তলায় ব'সে।।
 
--রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--
 
 

হাট

 
 
 
কুমোর-পাড়ার গোরুর গাড়ি
বোঝাই করা কলশি-হাঁড়ি.
গাড়ি চালায় বংশীবদন,
 সঙ্গে যে যায় ভাগ্নে মদন।
হাট বসেছে শুক্রবারে
বক্‌শিগঞ্জে পদ্মাপারে।
  জিনিসপত্র জুটিয়ে এনে
  গ্রামের মানুষ বেচে কেনে।
উচ্ছে বেগুন পটল মুলো,
বেতের বোনা ধামা কুলো,
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা,
   শীতের র‍্যাপার নকশা কাটা,
ঝাঁঝরি কড়া বেড়ি হাতা,
শহর থেকে সস্তা ছাতা।
  কলশি ভরা এখো গুড়ে
  মাছি যত বেড়ায় উড়ে।
খড়ের  আঁটি নৌকো বেয়ে
আনল ঘাটে চাষির মেয়ে।
  অন্ধ কানাই পথের 'পরে
  গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে।
পাড়ার ছেলে স্নানের ঘাটে
জল ছিটিয়ে সাঁতার কাটে।।
 
 --রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--