Sukumar Roy লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Sukumar Roy লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

২৬ নভে, ২০২০

পাকাপাকি



আম পাকে বৈশাখে
কুল পাকে ফাগুনে।
কাঁচা ইঁট পাকা হয়
পোড়ালে তা আগুনে।
রোদে জলে টিকে রং
পাকা কই তাহারে। 
ফলার টি পাকা হয়
লুচি দই আহারে।
                                          রাঁধুনি বসিয়া পাকে
পাক দেয় হাঁড়িতে।
সজোরে পাকালে চোখ
ছেলে কাঁদে বাড়িতে।
পাকায় পাকায় দড়ি
টান হয়ে  থাকে সে।
সজোরে পাকালে গোঁফ
তবু নাহি পাকে সে।

-- সুকুমার রায় --

২৫ অক্টো, ২০১৬

ভয় পেয়ো না


ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না-- 
সত্যি বলছি কুস্তি করে তোমার সঙ্গে পারব না।
মনটা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগটি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই!
মাথায় আমার শিং দেখে ভাই ভয় পেয়েছ কতই না--
জানো না মোর মাথার ব্যারাম, কাউকে আমি গুঁতোই না?
এস এস গর্তে এস, বাস করে যাও চারটি দিন,
আদর করে শিকেয় তুলে রাখব তোমায় রাত্রি দিন।
হাতে আমার মুগুর আছে তাই কি হেথায় থাকবে না?
মুগুর আমার হাল্‌কা এমন মারলে তোমায় লাগবে না।
অভয় দিচ্ছি, শুনছ না যে? ধরব নাকি ঠ্যাং দুটা?
বসলে তোমার মুণ্ডু চেপে বুঝবে তখন কাণ্ডটা!
আমি আছি, গিন্নি আছেন, আছেন আমার নয় ছেলে--
সবাই মিলে কামড়ে দেব মিথ্যে অমন ভয় পেলে।

--সুকুমার রায়--

৮ ফেব, ২০১৬

মাসি গো মাসি

 
মাসি গো মাসি পাচ্ছে হাসি
নিম গাছেতে হচ্ছে শিম,
হাতীর মাথায় ব্যাং-এর ছাতা
কাগের বাসায় বগের ডিম।।
--সুকুমার রায়--

৪ ফেব, ২০১৬

ছিটে-ফোঁটা

 
উঠোন-কোণে কড়াই ছিল,
পায়েস ছিল তাতে,
তাই নিয়ে কাক লড়াই করে কুঁকড়ো বুড়োর সাথে।
যুদ্ধ জিতে বড়াই ভারি,
তখন দেখে চেয়ে--
কখন এসে চড়াই পাখি,
পায়েস গেছে খেয়ে।।
 
--সুকুমার রায়--

৩ ফেব, ২০১৬

টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌

 
টিক্‌-টিক্‌ চলে ঘড়ি টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌
একটা ইঁদুর এল সে সময়ে ঠিক!
 
ঘড়ি দেখে এক লাফে তাহাতে চড়িল,
টং করে অমনি ঘড়ি বাজিয়া উঠিল।
 
অমনি ইঁদুর ভায়া লেজ গুটাইয়া,
ঘড়ির উপর থেকে পড়ে লাফাইয়া!
 
ছুটিয়া পলায়ে গেল, আর না আসিল,
টিক্‌-টিক্‌-টিক্‌ ঘড়ি চলিতে লাগিল।
 
--সুকুমার রায়--

১ ফেব, ২০১৬

প্যাঁচা আর প্যাঁচানি

 

প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি,
খাসা তোর চ্যাঁচানি!
শুনে শুনে আনমন
নাচে মোর প্রাণমন!
মাজা গলা চাঁচা সুর
আহ্লাদে ভরপুর!
গলা-চেরা ধমকে
গাছপালা চমকে,
সুরে সুরে কত প্যাঁচ
গিটকিরি ক্যাঁচ্‌ ক্যাঁচ্‌!
যত ভয় যত দুখ
দুরু দুরু ধুক্‌ ধুক্‌,
তোর গানে পেঁচি রে
সব ভুলে গেছি রে-
চাঁদ মুখে মিঠে গান
শুনে ঝরে দু'নয়ান।।
 
--সুকুমার রায়--

৩০ জানু, ২০১৬

খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারুও, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল 'হাঁসজারু' কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে "বাহবা কি ফূর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।" 
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা-
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লঙ্কা?
ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে; ধড়ে মুড়ো সন্ধি!
জিরাফের সাধ নাই মাঠে-ঘাটে ঘুরিতে,
ফড়িং-এর ঢং ধরি সেও চায় উড়িতে।
গরু বলে, "আমারেও ধরিল কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে?"
'হাতিমির দশা দেখ- তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে, "এই বেলা জঙ্গলে চল ভাই।"
সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট-
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট। 

আকাশের গায়ে

 

আকাশের গায়ে কিবা রামধনু খেলে,
দেখে চেয়ে কত লোক সব কাজ ফেলে;
তাই দেখে খুঁৎ-ধরা বুড়ো কয় চটে,
দেখছ কি এই রঙ পাকা নয় মোটে।।
 
--সুকুমার রায়--

২৯ জানু, ২০১৬

বলব কি ভাই


 
বলব কি ভাই হুগলি গেলুম
বলছি তোমায় চুপি-চুপি-
দেখতে পেলাম তিনটে শুয়োর
মাথায় তাদের নেইকো টুপি।।
 
--সুকুমার রায়--


আড়ি

 
 
কিসে কিসে ভাব নেই? ভক্ষক ও ভক্ষ্যে-
বাঘে ছাগে মিল হলে আর নেই রক্ষে।
 
শেয়ালের সাড়া পেলে  কুকুরেরা তৈরি,
সাপে আর নেউলে ত চিরকাল বৈরি!
 
আদা আর কাঁচকলা মেলে কোনোদিন সে?
কোকিলের ডাক শুনে কাক জ্বলে হিংসেয়।
 
তেলে দেওয়া বেগুনের ঝগড়াটা দেখনি?
ছ্যাঁক ছ্যাঁক রাগ যেন খেতে আসে এখনি।
 
তার চেয়ে বেশি আড়ি আমি পারি কহিতে-
তোমাদের কারো কারো কেতাবের সহিতে।
 
 
--সুকুমার রায়--