১৫ আগ, ২০১৭

বাবা আর মা






বাবাও নাকি ছোট ছিলেন

মা ছিলেন এক রত্তি

ঠাম্মা-দিদু বলে এ সব

মিথ্যে নয় সত্যি!

বাবা ছিলেন আমার সমান

টুয়ার সমান মা

বাবা চড়তেন কাঠের ঘোড়ায়

মা দিতেন হামা।

---সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়---

('কচিমুখে আবৃত্তির ছড়া' গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত)

ফুটফুটে জোছনায়


ফুটফুটে জোছনায় জেগে শুনি বিছানায়

বনে কারা গান গায় ঝিমিঝিমি ঝুমঝুম।

চাও কেন পিটিপিটি, উঠে পড় লক্ষ্মীটি!

চাঁদ চায় মিটিমিটি, বনভূমি নিঝ্ঝুম।

ফাল্গুনে বনে বনে, পরীরা যে ফুল বোনে

চলে এসো ভাইবোনে, চোখ কেন ঘুমঘুম?

--মোহিতলাল মজুমদার--

('কচিমুখে আবৃত্তির ছড়া' গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত)

২৭ মে, ২০১৭

চড়ুই


Image result for sparrow playing in sand clipart

ধুলোর মধ্যে স্নান সেরে নেয় 
ছোট্ট চড়ুই পাখি ,
সারাটা দিন কিচির মিচির ,
শুধুই ডাকাডাকি।
ঘুলঘুলিতে বাসা ওদের ,
সূর্য যখন ডোবে ,
তখন গিয়ে  সেইখানে ও 
মায়ের পাশে শোবে। 

-নীরেন্দ্রনাথ  চক্রবর্তী 

ছড়া

Image result for little girl and little bird clipart
পাখি তুই চলে আয় 
পিপঁড়ের গর্তে 
পাখি বলে,  যেতে পারি 
শুধু এক শর্তে;
রোজ যদি দিতে পারো 
সন্দেশ , দই,
তার সাথে একখানা 
গল্পের বই।  

- প্রীতিভূষণ চাকী 

আমি যদি হতুম

আমি যদি বাবা হতুম,
বাবা হত খোকা
না হলে তার নামতা পড়া 
মারতাম মাথায় টোকা।
রোজ যদি হতো রবিবার 
কি মজাটাই হত  যে আমার।
থাকতো নাকো  নামতা লেখা-জোকা। 
থাকতো নাকো  যুক্তাক্ষর,  অংকে ধরতো পোকা।

- কাজী নজরুল ইসলাম 

খোকার প্রশ্ন

Image result for curious boy clipart
আচ্ছা মাগো, বলো দেখি 
রাত্রি কেন কালো ?
সুয্যিমামা কোথা থেকে 
পেলেন এমন আলো ?
ফুলগুলো সব নানান রঙের 
কেমন করে হয় ?
পাতাগুলো সবুজ কেন 
ফুলের মতো নয় ?

-বিভাবতী সেন 

২২ ডিসে, ২০১৬

দামোদর শেঠ

(This illustration is copyright of Sweta Roy Choudhury©swetaroychoudhury@gmail.com.
                                                                All rights reserved.)
অল্পেতে খুশি হবে দামোদর শেঠ কি?
মুড়কির মোয়া চাই চাই ভাজা ভেটকি।
আনবে কটকি জুতো, মটকিতে ঘি এনো,
জলপাইগুড়ি থেকে এনো কই জিয়োনো।
চাঁদনিতে পাওয়া যাবে বোয়ালের পেট কি?

চিনেবাজারের থেকে এনো তো করমচা,
কাঁকড়ার ডিম চাই, চাই যে গরম চা।
নাহয় খরচা হবে, মাথা হবে হেঁট কি?

মনে রেখো বড় মাপে করা চাই আয়োজন,
কলেবর খাটো নয়, তিন মণ প্রায় ওজন।
খোঁজ নিয়ো ঝরিয়াতে জিলিপির রেট কী।।


--রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--


২৫ অক্টো, ২০১৬

ভয় পেয়ো না


ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না-- 
সত্যি বলছি কুস্তি করে তোমার সঙ্গে পারব না।
মনটা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগটি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই!
মাথায় আমার শিং দেখে ভাই ভয় পেয়েছ কতই না--
জানো না মোর মাথার ব্যারাম, কাউকে আমি গুঁতোই না?
এস এস গর্তে এস, বাস করে যাও চারটি দিন,
আদর করে শিকেয় তুলে রাখব তোমায় রাত্রি দিন।
হাতে আমার মুগুর আছে তাই কি হেথায় থাকবে না?
মুগুর আমার হাল্‌কা এমন মারলে তোমায় লাগবে না।
অভয় দিচ্ছি, শুনছ না যে? ধরব নাকি ঠ্যাং দুটা?
বসলে তোমার মুণ্ডু চেপে বুঝবে তখন কাণ্ডটা!
আমি আছি, গিন্নি আছেন, আছেন আমার নয় ছেলে--
সবাই মিলে কামড়ে দেব মিথ্যে অমন ভয় পেলে।

--সুকুমার রায়--

২১ মে, ২০১৬

সহজ পাঠ থেকে...

 
 
সেদিন ভোরে দেখি উঠে
বৃষ্টি বাদল গেছে ছুটে,
রোদ উঠেছে ঝিলমিলিয়ে
বাঁশের ডালে ডালে।
ছুটির দিনে কেমন সুরে
পুজোর সানাই বাজায় দূরে,
তিনটে শালিখ ঝগড়া করে
রান্নাঘরের চালে।
শীতের বেলায় দুই পহরে
দূরে কাদের ছাদের প'রে
ছোট্ট মেয়ে রোদ্‌দুরে দেয়
বেগ্‌নি রঙের শাড়ি।
চেয়ে চেয়ে চুপ করে রই--
তেপান্তরের পার বুঝি ওই,
মনে ভাবি ওইখানেতেই
আছে রাজার বাড়ি।
থাকত যদি মেঘে -ওড়া
পক্ষীরাজের বাচ্ছা ঘোড়া
তক্ষনি যে যেতেম তারে
লাগাম দিয়ে ক'ষে;
যেতে যেতে নদীর তীরে
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমিরে
পথ শুধিয়ে নিতেম আমি
গাছের তলায় ব'সে।।
 
--রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--
 
 

হাট

 
 
 
কুমোর-পাড়ার গোরুর গাড়ি
বোঝাই করা কলশি-হাঁড়ি.
গাড়ি চালায় বংশীবদন,
 সঙ্গে যে যায় ভাগ্নে মদন।
হাট বসেছে শুক্রবারে
বক্‌শিগঞ্জে পদ্মাপারে।
  জিনিসপত্র জুটিয়ে এনে
  গ্রামের মানুষ বেচে কেনে।
উচ্ছে বেগুন পটল মুলো,
বেতের বোনা ধামা কুলো,
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা,
   শীতের র‍্যাপার নকশা কাটা,
ঝাঁঝরি কড়া বেড়ি হাতা,
শহর থেকে সস্তা ছাতা।
  কলশি ভরা এখো গুড়ে
  মাছি যত বেড়ায় উড়ে।
খড়ের  আঁটি নৌকো বেয়ে
আনল ঘাটে চাষির মেয়ে।
  অন্ধ কানাই পথের 'পরে
  গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে।
পাড়ার ছেলে স্নানের ঘাটে
জল ছিটিয়ে সাঁতার কাটে।।
 
 --রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--