একটা ছেলে ছিল।
সেই ছেলেটা একদিন ভাত খেতে বসে মা কে বললে , মা আমি বাঘ ভাজা খাব।
মা বললে, বাঘ ভাজা খেতে হলে উনুন চাই এত্তো খানি, কড়াই চাই এত্তো বড়,
সরষের তেল চাই এক চৌবাচ্চা!! আমি গরীব মানুষ,এত সব কোথায় পাব বাবা?
ছেলে মুখ গোঁজ করে রইল। অগত্যা মা বললে, আচ্ছা আমি এদিকে সব যোগাড়
দেখি গে। তুমি শিকারী বাড়ি গিয়ে বাঘের খোঁজ-খবর কর।
ছেলেটা নাচতে নাচতে শিকারী বাড়ি গেল।
শিকারী সব শুনে হো-হো করে হাসতে লেগেছে, তখন শিকারীর মা এসে তাকে খুব
ধমক দিয়ে ছেলেটাকে ঘরের ভিতরে দেকে নিয়ে গিয়ে বললে, তুমি এতটুকুন ছেলে,
তুমি কি আর এতবড় বাঘ খেতে পার বাবা!! তোমার জন্য আমি একটা কচি বাঘ
ভেজে দিচ্ছি, খুশিমতন খাও।
এই বলে ক্ষীর ছানা এলাচ কপ্পুর দিয়ে একটি ছোট্ট বাঘ গড়ে , সেইটি ভেজে
খোকাকে খেতে দিয়েছে।
এদিকে হয়েছে কি.....শিকারী ঘরের পাশে এক সুড়ঙ্গের মধ্যে থাকত এক বাঘিনী
আর তার বাচ্চা। ছেলেটা যেই পা খেয়েছে, অমনি বাঘের বাচ্চাটা বাচ্চাটা মা কে
বলছে,মা, পা গেল, পা গেল। বাঘিনী দেখছে ,তাই তো !!
এমনি করতে করতে ছেলেটা যেই মাথা খেতে হাঁ করেছে, তখন বাঘিনী দেখলে, সব
তো যায়!!বাঘিনী এক লাফ দিয়ে পড়েছে ছেলেটার সামনে, -- দোহাই বাবা ছেড়ে দে।
তখন ছেলেটা বললে, রোজ রাতে যদি আমাদের বাড়ি পাহাড়া দাও, আর যে চোর
আমাদের সব চুরি করে নিয়ে গেছে, তার ঠ্যাংটি খোঁড়া করে দাও, আর বন থেকে মাযের
রান্নার কাঠকুটো বয়ে এনে দাও, তাহলে ছাড়ব, নাহলে নয়।
বাঘিনী বললে, সব করব বাবা, সব করব।
ছেলেটা তখন বাঘের মুড়ো বাঘকে ফিরিয়ে দিয়ে দিলে, আর বাঘিনীর পিঠে চড়ে বাড়ি
এসে বললে , মা , মা, দেখে যাও!!
সেই থেকে সবাই তাকে বাঘা বলে ডাকত।
--গৌরী ধর্মপাল--