Bangla chhora লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Bangla chhora লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

২৫ অক্টো, ২০১৬

ভয় পেয়ো না


ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না-- 
সত্যি বলছি কুস্তি করে তোমার সঙ্গে পারব না।
মনটা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগটি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই!
মাথায় আমার শিং দেখে ভাই ভয় পেয়েছ কতই না--
জানো না মোর মাথার ব্যারাম, কাউকে আমি গুঁতোই না?
এস এস গর্তে এস, বাস করে যাও চারটি দিন,
আদর করে শিকেয় তুলে রাখব তোমায় রাত্রি দিন।
হাতে আমার মুগুর আছে তাই কি হেথায় থাকবে না?
মুগুর আমার হাল্‌কা এমন মারলে তোমায় লাগবে না।
অভয় দিচ্ছি, শুনছ না যে? ধরব নাকি ঠ্যাং দুটা?
বসলে তোমার মুণ্ডু চেপে বুঝবে তখন কাণ্ডটা!
আমি আছি, গিন্নি আছেন, আছেন আমার নয় ছেলে--
সবাই মিলে কামড়ে দেব মিথ্যে অমন ভয় পেলে।

--সুকুমার রায়--

২১ মে, ২০১৬

সহজ পাঠ থেকে...

 
 
সেদিন ভোরে দেখি উঠে
বৃষ্টি বাদল গেছে ছুটে,
রোদ উঠেছে ঝিলমিলিয়ে
বাঁশের ডালে ডালে।
ছুটির দিনে কেমন সুরে
পুজোর সানাই বাজায় দূরে,
তিনটে শালিখ ঝগড়া করে
রান্নাঘরের চালে।
শীতের বেলায় দুই পহরে
দূরে কাদের ছাদের প'রে
ছোট্ট মেয়ে রোদ্‌দুরে দেয়
বেগ্‌নি রঙের শাড়ি।
চেয়ে চেয়ে চুপ করে রই--
তেপান্তরের পার বুঝি ওই,
মনে ভাবি ওইখানেতেই
আছে রাজার বাড়ি।
থাকত যদি মেঘে -ওড়া
পক্ষীরাজের বাচ্ছা ঘোড়া
তক্ষনি যে যেতেম তারে
লাগাম দিয়ে ক'ষে;
যেতে যেতে নদীর তীরে
ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমিরে
পথ শুধিয়ে নিতেম আমি
গাছের তলায় ব'সে।।
 
--রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--
 
 

হাট

 
 
 
কুমোর-পাড়ার গোরুর গাড়ি
বোঝাই করা কলশি-হাঁড়ি.
গাড়ি চালায় বংশীবদন,
 সঙ্গে যে যায় ভাগ্নে মদন।
হাট বসেছে শুক্রবারে
বক্‌শিগঞ্জে পদ্মাপারে।
  জিনিসপত্র জুটিয়ে এনে
  গ্রামের মানুষ বেচে কেনে।
উচ্ছে বেগুন পটল মুলো,
বেতের বোনা ধামা কুলো,
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা,
   শীতের র‍্যাপার নকশা কাটা,
ঝাঁঝরি কড়া বেড়ি হাতা,
শহর থেকে সস্তা ছাতা।
  কলশি ভরা এখো গুড়ে
  মাছি যত বেড়ায় উড়ে।
খড়ের  আঁটি নৌকো বেয়ে
আনল ঘাটে চাষির মেয়ে।
  অন্ধ কানাই পথের 'পরে
  গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে।
পাড়ার ছেলে স্নানের ঘাটে
জল ছিটিয়ে সাঁতার কাটে।।
 
 --রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর--

 
 

১১ ফেব, ২০১৬

বসন্তবৌরি

সেজে গুজে বসে আছে বসন্তবৌরি,
ঠিক যেন বসে আছে কনে সেজে গৌরী।  
চুপচাপ বসে ঐ  অপলক দৃষ্টি, 
টুং-টুং সুর তোলে  শুনতে কি মিষ্টি। 

কাঠঠোকরা

 
কাঠঠোকরা ঠকর ঠাঁই!
বনের সেপাই ঘুমটি নাই।
পোশাক-আশাক মজাদার,
লাল পাগড়ি জমাদার।
গাছের গায়ে আটকে নখ
ঠোকর মারে ঠকাঠক।
গর্ত খুঁড়ে গাছের গায়ে
তারই ভিতর রাত কাটায়।
ঠক-ঠকাঠক করছে কে?
কাঠঠোকরায় তাল ঠোকে।।
 


 

বুলবুল

 

চুলবুল বুলবুল
কোন্‌ পাখি তার তুল?
মিঠে শিস তুলছে
ঝুঁটি খানা দুলছে।
গাছে পাতা পত্তর
ঝিরিঝির দিন ভর,
ফুলকলি ফুটল,
বুলবুলি ছুটল।।
 

১০ ফেব, ২০১৬

বাবুই


বাবুই পাখির বাসা দোলে
গাছের ডালে পাতার কোলে।
ঝুলছে যেন বোতলখানা
বাজার থেকে সদ্য আনা।
ঘরের মাঝে রাত্রি হলে
জোনাক পোকার পিদিম জ্বলে।
বাবুই পাখির বাসাটি
দেখতে কেমন খাসাটি!
 

হাঁস

 
 
ওই দ্যাখো প্যাঁক প্যাঁক
হাঁস গুলো চলে,
খালে বিলে ঝিলে ওরা
চলে দলে দলে।
টুপ-টাপ দেয় ডুব
জলের তলায়,
গুগলি শামুক তুলে
ঠোঁটে ভেঙ্গে খায়।
হাঁস চলে আকাশেতে
হাঁস ভাসে জলে,
ডাঙ্গা দিয়ে গুটি গুটি
দেখো তারা চলে।

 

৮ ফেব, ২০১৬

লিচু-চোর

বাবুদের তালপুকুরে 
হাবুদের ডালকুকুরে 
সেকি বাস করলে তাড়া 
বলি থাম, একটু দাড়া। 

পুকুরের ঐ কাছে না 
লিচু এক গাছ আছে না 
হঠা না আস্তে গিয়ে 
য়্যাব্বড় এক কাস্তে নিয়ে।

গাছে গিয়ে যেই চড়েছি 
ছোট এক ডাল  ধরেছি,
ও বাবা মড়াত করে 
পড়েছি সরত জোরে।

পড়বি পড় মালীর ঘাড়েই ,
যে ছিল গাছের আড়েই। 
ব্যাটা ভাই বড় নচ্ছার,
ধুমাধুম গোটা দুচ্চার 

দিলে খুব কিল ও ঘুষি 
একদম জোরসে ঠুসি। 
আমিও বাগিয়ে থাপড় 
দে হাওয়া চাপিয়ে কাপড় 

লাফিয়ে ডিঙনু দেয়াল 
দেখি এক ভিটরে শেয়াল!
ও বাবা শেয়াল কোথা !
ভুলোটা দাড়িয়ে হোথা

দেখে যেই আতকে ওঠা 
কুকুরও জারলে ছোটা!
আমি কই  কম্ম কাবার 
কুকুরেই করবে সাবাড় 

বাবা গো , মা গো  বলে 
পাঁচিলের ফোকল গলে 
ঢুকি গিয়ে বোসেদের  ঘরে 
যেন প্রাণ আসলো ধড়ে। 

যাব আর? কান মলি ভাই!
চুরিতে আর যদি যাই!
তবে মোর নামই মিছা,
কুকুরের চামড়া খিঁচা !

সেকি ভাই যায় রে ভুলা!
মালির ঐ  পিটুনিগুলা!
কি বলিস? ফের হপ্তা!
তৌবা নাক খপ্তা।...

--কাজী নজরুল ইসলাম--


মাসি গো মাসি

 
মাসি গো মাসি পাচ্ছে হাসি
নিম গাছেতে হচ্ছে শিম,
হাতীর মাথায় ব্যাং-এর ছাতা
কাগের বাসায় বগের ডিম।।
--সুকুমার রায়--