৬ ফেব, ২০১৬

টুনটুনি আর দুষ্টু বিড়াল

 
                                                   

গৃহস্থদের ঘরের পিছনে বেগুন গাছ আছে। সেই বেগুন গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে টুনটুনি পাখিটি তার বাসা বেঁধেছে।
বাসার ভিতরে তিনটি ছোট্ট-ছোট্ট ছানা হয়েছে। খুব ছোট্ট ছানা, তারা উড়তে পারে না, চোখও মেলতে পারে না। খালি হাঁ করে চিঁ চিঁ করে।
গৃহস্থদের বিড়ালটা ভারি দুষ্টু। সে খালি ভাবে "টুনটুনির ছানা খাব।" একদিন সে বেগুন গাছের তলায় এসে বলল, "কী করছিস লা টুনটুনি?"
টুনটুনি তার মাথা হেঁট করে বেগুন গাছের ডালে ঠেকিয়ে বলল, প্রণাম হই, মহারানি!"
তাতে বিড়ালনি ভারি খুশি হয়ে চলে গেল।
এমনি সে রোজ আসে, রোজ টুনটুনি তাকে প্রণাম করে আর মহারানি বলে, আর সে খুশি হয়ে চলে যায়।
এখন টুনটুনির ছানাগুলি বড় হয়েছে, তাদের সুন্দর পাখা হয়েছে। তারা আর চোখ বুজে থাকে না। তা দেখে টুনটুনি তাদের বলল, "বাছা, তোরা উড়তে পারবি?"
ছানারা বলল, "হ্যাঁ  মা, পারব।"
টুনটুনি বলল, "তবে দেখ তো দেখি, ওই  তালগাছটার ডালে গিয়ে বসতে পারিস কিনা।"
ছানারা তখনই উড়ে গিয়ে তাল গাছের ডালে বসল। তা দেখে টুনটুনি হেসে বলল, "এখন দুষ্টু বিড়াল আসুক দেখি!"
খানিক বাদেই বিড়াল  এসে বলল, "কী করছিস লা টুনটুনি?"
তখন টুনটুনি পা উঠিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বলল, "দূর হ, লক্ষ্মীছাড়ি বিড়ালনি!" বলেই সে ফুড়ুৎ করে উড়ে পালাল।
 
দুষ্টু বিড়াল দাঁত খিঁচিয়ে লাফিয়ে গাছে উঠে, টুনটুনিকেও ধরতে পারল না, ছানাও খেতে পেল না। খালি বেগুন কাঁটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরল।

--উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী--


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন